Shorthand বা সাঁটলিপি Shorthand বা সাঁটলিপি এর শাব্দিক অর্থ:
Shorthand ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা পরিভাষা হল সাঁটলিপি। সংস্কৃত “শানী” শব্দের অর্থ সংকেত, সংক্ষেপ বা ইশারা। সংস্কৃত “শানী” শব্দ হতে “সাঁট” এবং লিখন কৌশল থেকে “লিপি” শব্দটি গৃহীত হয়েছে। এ দুটি শব্দের সমন্বয়েই “সাঁটলিপি” শব্দের উদ্ভব । Shorthand এর সংজ্ঞা: মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য অর্থপূর্ণ যে কথা বলে, তাকে ভাষা বলে। মানুষের মুখের ভাষাকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সংকেতের সাহায্যে সংক্ষিপ্ত করে প্রকাশ করার মাধ্যমকে Shorthand বা সাঁটলিপি বলে। অর্থাৎ কোন একটি বিষয়কে বিশেষ সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কোন রকম অর্থের পরিবর্তন ছাড়া প্রকাশ করাকে Shorthand বলে। ইংরেজিতে বলা যায়, “Writing a subject matter by using some specific sym- bols which can be read without changing its meaning is called shorthand”
সাঁটলিপি উৎপত্তির পূর্বকথা: মানুষ দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করে ক্রমশ ধাপে ধাপে সভ্যতার দিকে অগ্রসর হলেও সমাজ বিজ্ঞানী ও নৃতত্ত্ববিদগণের সর্বাধুনিক অনুসন্ধানের ফলে আমরা জানতে পারি যে, আদিম সমাজের মানুষ একেবারে নগণ্য অবস্থায় জীবন আরম্ভ করেছিল। পাহাড়ের গুহায় অথবা গাছের গুঁড়ির ফাটলে মানুষ বাস করত। মানুষ গাছের পাতা ফল-মূল সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের কোন ভাষা ছিল না, যা ছিল তাও তাদের নিজেদের মাঝে সীমাবদ্ধ। তদুপরি মানুষের জীবন কিন্তু থেমে ছিল না। আজকের উন্নত নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা যে সকল কাজ করছি আদিম সমাজের মানুষেরা ঐ সকল কাজ ঈশারা-ইঙ্গিতে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে তখনকার প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন মেটাতো, একে অপরের সঙ্গে ভাব আদান-প্রদান করে সমস্যার সমাধान করতো। বিশেষ বিশেষ সংকেত ঈশারা-ইঙ্গিত ছিল সময়কার লুপ্ত Shorthand. সুতরাং আমরা স্পষ্টভাবে বলতে পারি যে, আদিম যুগ থেকেই সাঁটলিপির প্রচলন ছিল। যতদুর জানা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ অব্দে টিরো রোমে বক্তৃতা লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি পদ্ধতির আবিষ্কার করেন এবং রোমান স্কুলে রাজন্যবর্গকে উহা শিক্ষা দেয়া হত ।
সাঁটলিপির উৎপত্তি : ‘টিমথি ব্রাইট’ নামক একজন বৃটিশ লেখক ১৫৮৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম শর্টহ্যান্ডের উপর একটি বই প্রকাশ করেন । সে সুবাদে বলা চলে ইংল্যান্ডই আধুনিক সাঁটলিপির সুতিকাগার। তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতি ‘ব্রাইট পদ্ধতি’ নামেই প্রসিদ্ধি লাভ করে। ১৬০২ খ্রিস্টাব্দে ‘জন ইউলিস’ অক্ষরভিত্তিক একটি পদ্ধতিতে একটি বই লিখেন। ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ‘ড. জন বাইরণ’ শর্টহ্যান্ডের আরও অধিকতর জনপ্রিয় অপর একটি বই প্রকাশ করেন।
সাঁটলিপির ক্রমবিকাশ: এরপর সাঁটলিপির (Shorthand) উপর পরীক্ষা- নিরীক্ষা চলতে থাকে। ১৮৩৭ সালে ইংল্যান্ডের স্যার আইজাক পিটম্যান (Sir Isaac Pitman) ধ্বনিভিত্তিক সাঁটলিপি (Shorthand) পদ্ধতির একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রদান করেন এবং তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতিই বিজ্ঞানসম্মত। উহা ‘পিটম্যান শর্টহ্যান্ড পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে আমেরিকার জন রবার্ট গ্রেগ (Jhon Robert Gregg) ১৮৮৮ সালে শর্টহ্যান্ডের আরও সহজ সরল একটি পদ্ধতির উদ্ভাবন করে সারা সৃষ্টি করেন। তাঁর পদ্ধতি অধিকতর বিজ্ঞান সম্মত । তাঁর এই পদ্ধতি ‘গ্রেগ পদ্ধতি’ নামে পরিচিত । বর্তমানে এ দুটি পদ্ধতির ইংরেজি শর্টহ্যান্ডেই পৃথিবীর সর্বত্র সমাদৃত হয়ে আসছে।
বাংলা সাঁটলিপির ইতিবৃত্ত: ভারতের প্রখ্যাত সাঁটলিপিকার শ্রী সুরেন্দ্রনাথ রক্ষিত উদ্ভাবিত ‘বাণী রেখা’ পদ্ধতির অনুকরণে বাংলাদেশে সাঁটলিপির কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এগুলির মধ্যে জনাব মোহাম্মদ আলী মিয়ার ‘বাংলা সাঁটলিপি’, মোহাম্মদ হোসেনের ‘বাংলা সংকেত লিপি’, মোঃ নূর নবী, জয়নুল আবেদীন ও মাহমুদ মীর্জার ‘আধুনিক বাংলা সাঁটলিপি অভিধান’, মোঃ আবদুর রব এর ‘সচিব বিজ্ঞান’ মুহম্মদ আবু হারিস ও মোঃ নজরুল ইসলাম এর ‘সাচিবিক বিদ্যা’ মোঃ ইউনুছ হাওলাদারের ‘সাচিবিক বিদ্যা’ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এর ‘সাচিবিক বিদ্যা’ মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন এর ‘সাঁটলিপি ও মুদ্রাক্ষর লিখন (তত্ত্বীয়)’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য ।
বহুভাষী পদ্ধতি: বাংলাদেশের বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা বগুড়া জেলার (NACTR) এর পরিচালক, সাবেক জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নট্রামস) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক প্রফেসর মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার বহুভাষী পদ্ধতি আবিস্কার করেন। এবং তিনি A Tex Book of Multilingual Shorthand নামে একটি পুস্তক রচনা করেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলা, ইংরেজি ও আরবী সহ অন্যান্য ভাষায় সাঁটলিপি লেখা যায় । এই পদ্ধতি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। প্রথমে এই বইটি ঢাকা বোর্ডে ডিপ্লোমা ইন কমার্স এর পাঠ্য বই হিসাবে চালু হয়। বর্তমানে দেশের সকল শিক্ষা বোর্ডের স্কুল ও কলেজের পাঠ্য বই হিসাবে চালু আছে। তা ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এ পদ্ধতি চালু আছে ৷ বহুভাষী সাঁটলিপির আঁচড় সংখ্যা কত? বহুভাষী সাঁটলিপির আচড় সংখ্যা ২৪টি। বহুভাষী সাঁটলিপি কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে? বহুভাষী সাঁটলিপিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জন বর্ণ। স্বরবর্ণের সংখ্যা ০৫টি ও ব্যঞ্জন বর্ণের সংখ্যা ১৯টি। সাঁটলিপির গতিমুখ বলতে কী বোঝায়? সাঁটলিপির গতিমুখ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আচড় লেখার পদ্ধতিই হলো গতিমুখ। গতিমুখ অনুযায়ী যে আচড়ের গতি যেখানে শেষ হবে শব্দ গঠনের সময় অন্য আচড়গুলো সেখানে যুক্ত হবে । সাঁটলিপির গতিমুখ অনুসারে আঁচড়গুলো কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে? সাঁটলিপির গতিমুখ অনুসারে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা (১) উর্ধ্বগতি (২) নিম্নগতি (৩) সম্মুখগতি ।
উর্ধ্বগতি: সাঁটলিপি খাতায় রেখা টানা লাইনের নীচে রেখা থেকে উপরের দিকে লেখা আচড়গুলিকে উর্ধ্বগতিমুখ আচড় বলা হয়।
নিম্নগতি: সাঁটলিপি খাতার উপরের রেখা থেকে বা মাঝ থেকে নীচের রেখা পর্যন্ত লেখা আচড়গুলোকে নিম্ন গতিমুখ বলে।
সম্মুখগতি: সাঁটলিপি খাতার নীচের রেখার একটু উপরে থেকে সামনের দিকে খোলা আচড়গুলোকে সম্মুখগতি বলে। আর ৩টি আচড় আছে গোল । বাম থেকে ডানে ও ডান থেকে বামে লেখা যায় ৷ সাঁটলিপি লেখার নীতিমালা কী? সাঁটলিপি লেখার প্রথম এবং প্রধান শর্ত হল উচ্চারণ বা ধ্বনি। সাঁটলিপি যে কোন চিহ্নই ব্যবহার করা হোক না কেন তা দিয়ে বাক্যের উচ্চারণটাই বানান করে সংকেত চিহ্নে রূপান্তর করা হয়। এই রূপান্তরের নীতিমালা নিম্নে আলোচনা করা হল।
আঁচড় বা বর্ণমালার ব্যবহার: প্রথমত অচিড়ের পরিমাণ অনুযায়ী সঠিকভাবে শিখতে হবে। একটি আঁচড়ের সঙ্গে অন্য একটি আঁচড়যুক্ত করে শব্দ তৈরি করতে হবে।
স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের ব্যবহার: শুধু দুই আচঁড়যুক্ত করেই শব্দ তৈরি করা যায় তা নয়। শব্দকে সহজভাবে লেখার জন্য ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে স্বরবর্ণের ব্যবহার করে শব্দ গঠন করতে হবে।
নোট প্রয়োগ করা: নোট প্রয়োগ নীতিমালা ব্যবহার করে মূলত: শব্দের আকার ছোট করা হয়। যুক্ত বিচ্ছিন্ন ভাবে আঁচড় দ্বারা শব্দ গঠন করার নীতিমালা আছে তা প্রয়োগের অভ্যাস করা।
ব্রিফ ফরম ব্যবহার: সাঁটলিপিতে গতি বৃদ্ধি ও দ্রুত নির্ভুল লেখার জন্য এক, দুই, তিন, ও চার আঁচড়ের সমন্বয় গঠিত ব্রিফ ফরম/বিশেষ লিপির ব্যবহার করে ব্রিফফরমগুলি মুখস্থ করা প্রয়োজন ।
চড়ের গআঁতিমুখ: প্রতি আঁচড়ের পরিমাপ অনুযায়ী গতিমুখের প্রতি নজর রাখতে হবে। গতিমুখ পরিবর্তন হলে অর্থের পরিবর্তন হবে। তা ছাড়া যে আঁচড়ের গতি যেখানে শেষ হবে পরবর্তী আঁচড় সেখানে যুক্ত হবে।
বিরাম চিহ্ন: বিরাম চিহ্নের সঠিক প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেদিকে বিশেষ নজর রেখে প্রয়োগ করতে হবে। সাঁটলিপিতে ব্রিফ ফরম এর গুরুত্ব কী? বক্তার বক্তব্যকে দ্রুত লেখার জন্য সাঁটলিপিতে যে নিয়মনীতি ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে ব্রিফ ফরম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। নিম্নে গুরুত্বসমূহ আলোচনা করা হল ৷ গতি বৃদ্ধি: ব্রিফ ফরম শব্দকে একটি বিশেষ চিহ্নের মাধ্যমে প্রয়োগ করে। ফলে শ্রুত লিখনের সময় দ্রুত লেখা যায় এবং অনুবাদ করার সময় সহজ হয় ।
স্বল্পচিন্তা: ব্রিফ ফরমগুলো মুখস্থ থাকার ফলে ডিকটেশন গ্রহনের পর অনুবাদের সময় অল্পচিন্তাতেই অনুবাদ সহজে করা যায় ৷
স্বর্বোচ্চ গতিতে শ্রুতি লিখন: সাঁটলিপিতে ব্রিফ ফরম ব্যবহারের মাধ্যমে স্বর্বোচ্চ গতি তোলা যায় ৷
দ্রুত পাঠ উদ্ধার: বিফ ফরম মুখস্থ থাকায় দ্রুত পাঠ উদ্ধার করা সম্ভব হয় ।
পরিশ্রম কমে যায়: ব্রিফ ফরম ব্যবহার করে দ্রুত লিখনে পরিশ্রম কম হয়। অনুরূপভাবে অনুবাদের সময় কম খরচ হয় । অপচয় রোধ করা যায় ।
সাঁটলিপিতে দক্ষতা অর্জন: ব্রিফ ফরম ব্যবহার করে সাঁটলিপি লিখনে সাঁটলিপিকারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
সাঁটলিপিতে ফ্রেজের ভূমিকা: ‘ফ্রেজ’ শব্দের অর্থ শব্দ গুচ্ছ। অর্থাৎ দুই বা ততোধিক শব্দ একত্রে একটি বিশেষ অর্থে প্রকাশ করা হলে তখনই ঐ শব্দ সমষ্টিকে একত্রে ‘ফ্রেজ’ বলা হয়। শর্টহ্যান্ডের পরিভাষায় ‘ফ্রেজ’ হলো এমন একটি শব্দ সমষ্টি যা শর্টহ্যান্ডে একত্রে লেখা হয়। ফ্রেজ হল সাঁটলিপি সংক্ষেপে অথচ দ্রুত লিখনের সর্বশেষ উত্তম কৌশল। বিশেষ নজর রাখতে হবে. যেন কৌশল প্রয়োগ করতে গিয়ে বিষয়টি জটিলতার মধ্যে ডুবে না যায় ৷ বড় হাতের অক্ষরের চিহ্ন (Signs of Capitalization) কী ? বিশ্বের প্রত্যেকটি আলাদা ভূখণ্ডে ভিন্ন ভিন্ন জাতি বসবাস করে থাকে। তাদের সমাজ প্রথা, চালচলন, বাচনভঙ্গি এবং ভাষাও ভিন্ন ভিন্ন। তাই এ পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি তাদের নিজেদের মনের ভাব অন্যের কাছে প্রকাশ করার জন্যে নিজস্ব একটি ভাষা ব্যবহার করে থাকে। প্রত্যেকেই তাদের মাতৃভাষাকে প্রকাশের জন্য বিভিন্ন সময় কতগুলি নির্দিষ্ট নিয়ম, সংকেত বা পদ্ধতির আবিষ্কার করেছে। এ পদ্ধতির ফলদায়ক রূপই হল কতগুলি নির্দিষ্ট বর্ণমালার আবিস্কার। এবং নিদৃষ্ট নীতিমালার প্রয়োগ। ইংরেজি ভাষায় দু’ধরনের অক্ষর ব্যবহৃত হয় । যথাঃ- ১) বড় হাতের অক্ষর (Capital letter). ১) ছোট হাতের অক্ষর (Small letter). সাঁটলিপিতে ইংরেজি বড় হাতের জন্য বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। সাধারণত ইংরেজি বাক্যের প্রথম অক্ষর বড় হাতের হয়ে থাকে। তা ছাড়া ব্যাক্তির নাম, কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম, ভৌগলিক স্থানের নাম, দিনের নাম, মাসের নাম, ধর্মের নাম, নদ-নদীর নাম, সাগর মহাসাগর ইত্যাদির নাম লেখার ক্ষেত্রে প্রথম অক্ষর বড় হাতের হয়ে থাকে। সাঁটলিপির জগতে এ সব শব্দ লেখার জন্য বড় হাতের অক্ষর চিহ্ন ব্যবহার হয়ে থাকে। শব্দ লেখার পর কলম উঠিয়ে ড্যাস চিহ্নের ন্যায় দুটি দাগ দিতে হয় ৷ ইংরেজি সাঁটলিপি লেখার সময় বড় হাতের অক্ষর চিহ্নিত করণের জন্য ড্যাস আকৃতির যে বিশেষ (1) চিহ্ন দেয়া হয় তাকে বড় হাতের অক্ষর চিহ্ন বা (Sings of Capitalization) বলে । বাংলা ভাষায় বড় হাতের অক্ষর ব্যবহার হয় না বলে এখানে Signs of Capitalization এর প্রয়োজনীয়তা নেই ৷ বহুভাষী সাঁটলিপিতে ২৪টি আঁচড়ের আকৃতি অনুসারে কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে? (১) পূর্ণ লাইন আঁচড়, (২) অর্ধ্ব লাইন আঁচড়, (৩) কোয়াটার লাইন আঁচড় পূর্ণ লাইনের আঁচড়: বহুভাষী পদ্ধতিতে সাঁটলিপি লেখার নির্ধারিত খাতার লাইনে পূর্ণ লাইনের বরাবর যে আঁচড়গুলো লেখা হয়, সেগুলো পূর্ণলাইন আঁচড় । অর্ধ্ব লাইন আঁচড়: যে সমস্ত আঁচড়গুলি সাঁটলিপি খাতায় লাইনের অর্ধেক বরাবর লেখা হয় সে আঁচড়গুলোকে অর্ধ্ব লাইন আঁচড় বলা হয় । কোয়াটার লাইন আঁচড় : যে সমস্ত আঁচড়গুলি সাঁটলিপি খাতায় কোয়াটার লাইন বরাবর লেখা হয় সে আঁচড়গুলিকে কোয়াটার লাইন আঁচড় বলা হয় । বহুভাষী সাঁটলিপিতে তুলনামূলক আঁচড় বলতে কী বোঝায়: বহুভাষী সাঁটলিপিতে ২৪টি আঁচড়ের আকৃতগত দিক থেকে একই ধরনের আঁচড় পাশাপাশি লিখে পূৰ্ণলাইন, অর্ধ্ব লাইন ও কোয়াটার লাইনের পার্থক্য বোঝা যায় তাকেই তুলনামূলক আঁচড় বলে । যেমন : ই, এ, আই E,A,I ছ,ফ,ভ S,F,V ছ,প,ব S,P,B এইভাবে ২৪টি আঁচড়ে পার্থক্য করা হয়েছে। বহুভাষী সাঁটলিপি জনপ্রিয়তার কারণ কী? বহুভাষী সাঁটলিপি পদ্ধতি বিজ্ঞানভিত্তিক দেশীয় প্রযুক্তি। এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তার কারণ নিম্নে প্রদত্ত হল: | এই পদ্ধতিতে একই আচড়ে বাংলা, ইংরেজি, আরবী, হিন্দি সহ বেশ কয়েকটি ভাষায় সাঁটলিপিতে লেখা যায়। ■ ইহা একটি দেশীয় প্রযুক্তি, সাবলীল ভাষায় ও সহজ পদ্ধতিতে রচিত। বহুভাষী পদ্ধতিতে সাঁটলিপি অতি সহজেই আয়ত্ত করা যায় ৷ ■ এই পদ্ধতিতে সুত্রের ব্যবহার সংক্রান্ত চিহ্ন বাগধারা বাগবিধির ব্যবহারে সহজবোধ্য করা হয়েছে। ইহা মুখস্থ করা বা মনে রাখা যায় সহজেই । ■ এই পদ্ধতিতে মাত্র ২৪টি আঁচড় ব্যবহার করা হয়েছে যা যে কোন প্রশিক্ষনার্থী সহজেই আয়াত্ব করতে পারে। . বহুভাষী সাঁটলিপির ২৪টি আঁচড় আকৃতিগত দিক থেকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আবার গতিমুখের দিক থেকেও ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের মনে রাখার জন্য সহজবোধ্য হয়েছে। ভাষাগত দিক থেকে বহুভাষী বইটি অত্যন্ত সহজবোধ্য এবং প্রাঞ্চল করে লেখা হয়েছে এবং প্রতিটি উদাহরণ সহজে মনে রাখা যায় ৷
উল্লিখিত কারণে বহুভাষী সাঁটলিপি পদ্ধতি পাঠে
জনপ্রিয়তার শীর্ষে স্থান দখল করে আছে।
সাঁটলিপির জনপ্রিয় পদ্ধতির ইংরেজি নাম কী?
বহুভাষী সাঁটলিপি (Multilingual Shorthand) বহুভাষী সাঁটলিপির আবিষ্কারক কে?
বগুড়ার বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সাবেক নট্রামস (National Training and Research Academy For Multilingual Shorthand) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক প্রফেসর মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার বহুভাষী শর্টহ্যান্ড পদ্ধতির আবিষ্কারক। প্রফেসর মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার বগুড়া জেলার সদর উপজেলার রামশহর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৫৩ সালে জন্ম গ্রহণ করেন ৷ তিনি দীর্ঘ ১৪ বৎসর সাধনা ও গবেষণার পর একই আঁচড়ে বাংলা, ইংরেজি ও আরবী ভাষায় সাঁটলিপিতে লেখার পদ্ধতির আবিষ্কারক। তিনি একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তাঁর লেখা কম্পিউটার বিজ্ঞানের বই ১ম শ্রেণী থেকে মাস্টার ডিগ্রী পর্যন্ত
পড়ান হয়। তাঁর লেখা সাচিবিক বিদ্যা বই সকল কলেজে পড়ান হচ্ছে।
বহুভাষী সাঁটলিপির নামকরণ বহুভাষী হল কেন?
বহুভাষী সাঁটলিপি কোন ভাষা নয় । বেশ কয়েকটি ভাষা একই আঁচড়ে লেখার পদ্ধতি মাত্র। বহুভাষী পদ্ধতিতে একই চিহ্নের সাহায্যে বাংলা, ইংরেজি ও আরবী ভাষার শর্টহ্যান্ড লেখা যায়। এ কারনেই এই পদ্ধতির নামকরণ করা হয়েছে বহুভাষী সাঁটলিপি ।
পৃথিবীর আদি পদ্ধতি কোনটি?
পিটম্যান পদ্ধতি
আধুনিক সাঁটলিপির সুতিকাগার কোন্ দেশ?
ইংল্যান্ড ।
শর্টহ্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা:
আধুনিক বিশ্বে শর্টহ্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব অসীম। বর্তমানে প্রতিটি অফিস-আদালত, ব্যবসা-বণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা পরিচালনার জন্য শর্টহ্যাণ্ড ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। শর্টহ্যাণ্ড শিখে বেকার যুবক ও যুব মহিলা স্বল্প সময়ে ও স্বল্প শিক্ষাগত যোগ্যতার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, এনজিও ও বেসরকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সংস্থান করে নিতে পারে । সাংবাদিকতার কাজেও সাঁটলিপির ব্যবহার হয়ে থাকে।
অবশেষে বলা যায় ভাষার দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে শর্টহ্যান্ড অসামান্য ভূমিকা রাখে।
পিটম্যান ও গ্রেগ শর্টহ্যান্ড এবং বহুভাষী শর্টহ্যান্ডের পদ্ধতি :
পিটম্যান শর্টহ্যান্ড, গ্রেগ শর্টহ্যান্ড এ বহুভাষী শর্টহ্যান্ডের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর। (Narrate the dif- ference between Pitman Shorthand, Gregg Shorthand and Multilingual Shorthand)
বর্তমান বিশ্বে ইংরেজি শর্টহ্যান্ড বা সাঁটলিপি লিখার তিনটি প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে। এ তিনটি পদ্ধতিই বিশ্বের সকল স্থানে সমান স্বীকৃত ও সমাদৃত হয়ে আসছে। পদ্ধতি তিনটি একটি স্যার আইজ্যাক পিটম্যান উদ্ভাবিত ‘Pitman Shorthand’, John Robert Gregg f ‘Gregg Shorthand’ এবং অন্যটি প্রফেসর মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার উদ্ভাবিত ‘বহুভাষী সাঁটলিপি’ বা Multilingual Shorthand
পিটম্যান শর্টহ্যান্ড পদ্ধতি : এ পদ্ধতির উদ্ভাবক স্যার আইজ্যাক পিটম্যান ১৮৩৭ সালে লন্ডনে তাঁর বইখানার প্রথম প্রকাশ করেন। তিনি স্বরধ্বনির উপর ( vowel) (এবং ব্যঞ্জনবর্ণ (consonant) গুলি লিখেছেন। এ স্বরধ্বনির উপর ভিত্তি করেই ইংরেজি যে কোন শব্দ বা বাক্য লেখা যাবে । ‘পিটম্যান শর্টহ্যান্ড’ পদ্ধতিতে যে কোন শব্দ পরিপূর্ণভাবে লেখার জন্যে স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণের চিহ্নগুলি তিনটি স্থানে বসিয়েছেন যেমন: above the line, on the line, through the line (লাইন হতে উপরে, লাইনে এবং লাইন ভেদ করে) যেমন : inital, medial and final (প্ৰাথমিক, মধ্যম এবং চুড়ান্ত)। এদিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে, লাইনের স্থান এবং অক্ষরের স্থানের সাথে অনেক মিল বা সাদৃশ্য বর্তমান রয়েছে। ‘পিটম্যান শর্টহ্যান্ড’ পদ্ধতিতে বর্ণগুলি হালকা ও গভীরভাবে লিখতে হয়। এ শর্টহ্যান্ড পদ্ধতির দ্রুততা রক্ষা করার জন্যে নরম কাঠ পেন্সিলের সাহায্যে রেখা করা বা পেন্সিল করা খাতা বা কাগজে লিখতে হয়; না হলে শ্রুত লিখনের সময় লেখার দ্রুততা ও সৌন্দৰ্য ব্যাহত হয় ৷
গ্রেগ শর্টহ্যান্ড পদ্ধতি: ১৮৮৮ সালে John Robert Gregg আমেরিকায় তাঁর উদ্ভাবিত ‘গ্রেগ শর্টহ্যান্ড’ বইয়ের প্রথম প্রকাশ করেন। ‘গ্রেগ শর্টহ্যান্ড’ পদ্ধতিতেও স্বরবর্ণ ( vowel ) এবং (consonant) ব্যঞ্জনবর্ণ উভয়েরই প্রচলন রয়েছে। এর সাহায্যে যে কোন শব্দ এবং বাক্যই লেখা যায় । এ প্রকার শর্টহ্যান্ড পদ্ধতিতে কোন প্রকার হালকা বা গভীর চিহ্নের ইঙ্গিত নেই। কেবল অক্ষরগুলির তিনটি আকার রয়েছে লেখার সুবিধার্থে এর কোন প্রকার অবস্থান নিয়েও চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না। সুবিধামত এটা লেখা যায়। এ পদ্ধতিতে কাঠ পেন্সিল, বলপেন অথবা অন্য যে কোন প্রকার কলমের সাহায্যে সাদা কাগজ অথবা পেন্সিল করা খাতা যে কোন প্রকার কাগজে এটা লেখা যায় ।
বহুভাষী পদ্ধতি:
বাংলাদেশের বগুড়া জেলার প্রখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার বহুভাষী সাঁটলিপি পদ্ধতির উদ্ভাবক। তাঁর উদ্ভাবিত বহুভাষী পদ্ধতিকে ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন করেন। বহুভাষী পদ্ধতিতে স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ উভয়ের প্রচলনই রয়েছে। এর সাহায্যে যে কোন শব্দ এবং বাক্য লেখা যায় ৷ এ প্রকার শর্টহ্যান্ড পদ্ধতিতে কোন প্রকার হালকা বা গভীর চিহ্নের ইঙ্গিত নেই। অক্ষরগুলির তিনটি আকার রয়েছে, লেখার সময় এর কোন প্রকার অবস্থান নিয়ে চিন্তা কর প্রয়োজন হয় না, সুবিধা মতো এটা লেখা যায়। এ পদ্ধতিতে কাঠ পেন্সিল, বলপেন বা যে কোন রকমের কলনের সাহায্যে সাদা কিংবা নিউজপ্রিন্ট কাগজে অথবা রেখাটানা যে প্রকার কাগজই এটা লেখা যায়। উল্লেখিত দুটি পদ্ধতি দ্বারা শুধুমাত্র ইংরেজি সাঁটলিপি লেখা যায় অন্য কোন ভাষার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয় অথচ বহুভাষী পদ্ধতি দ্বারা ইংরেজি, বাংলা ও আরবী ভাষাকে একই সংকেত দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব। এই ব্যতিক্রম ধর্মীতার কারণে এর নামকরণ করা হয়েছে বহুভাষী সাঁটলিপি বা (Multilingual Shorthand ).
সাঁটলিপিতে (Brief Forms) বা সংক্ষিপ্ত কাঠামো কী?
ইংরেজি Brief Forms শব্দের আভিধানিক অর্থ হল সংক্ষিপ্ত কাঠামো। এখানে ইংরেজী Brief শব্দের অর্থ হল সংক্ষিপ্ত এবং Forms শব্দের অর্থ হল কাঠামো। সুতরাং Brief Forms শব্দের বাংলা পরিভাষা হল সংক্ষিপ্ত কাঠামো। Shorthand এর গতিবৃদ্ধির জন্য Brief Forms সম্পূর্ণ মুখস্থ রাখতে হবে।
সাঁটলিপি লেখার প্রধান মৌলিক নিয়ম কী কী? What
are the two basic rules of writing short-
hand?
সাঁটলিপিতে শব্দ লেখার নিয়ম হলো দুই প্রকার । যথা:
ক) উচ্চারণ অনুযায়ী লেখা ।
খ) সংক্ষেপে নীতি অনুযায়ী লেখা ।
সাঁটলিপির জনপ্রিয় পদ্ধতি কোনটি?
বহুভাষী পদ্ধতি ।
সাঁটলিপির বিরাম চিহ্ন কী?
বাংলা ও ইংরেজির চিহ্নগুলো সাঁটলিপির সংকেতের
সঙ্গে মিলে যায় বলে এখানে একটু ব্যতিক্রমধর্মী বিরাম চিহ্ন
রয়েছে।
মানসম্মত প্রশিক্ষণালয়: মানসম্মত প্রশিক্ষণালয় ছাড়া সাঁটলিপি লিখনে পারদর্শিতা অর্জন করা সম্ভব নয়। মানসম্মত প্রশিক্ষণালয়েই ভাল প্রশিক্ষণ পাওয়া যাবে।
নিয়মিত অনুশীলন: সাঁটলিপি নিয়মিত অনুশীলন না করলে খুব সহজেই ভুলে যেতে হয়। তাই শ্রুতলিপির গতি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত অনুশীলন করা অত্যাবশ্যক ।
শব্দ গঠন পদ্ধতি: সাঁটলিপিতে শব্দ গঠনে নির্ধারিত পাঠ্য বইয়ে বিভিন্ন নিয়মাবলী রয়েছে। শুনামাত্রই যাতে সাঁটলিপিতে শব্দ গঠন করা যায় তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে ।
ব্রিফ ফরম ব্যবহার: সাঁটলিপি গতি বৃদ্ধির জন্য আবিষ্কৃত হয়েছে ব্রিফ ফরম। অতএব, গতি বৃদ্ধির জন্য যথাক্রমে ব্রিফ ফরম প্রোয়োগের অভ্যাস করতে হবে। যদি নিজেকে দক্ষ মনে করেন তাহলে কঠিন ব্রিফ ফরম সহজ করে বানিয়ে নিতে পারেন।
ফ্রেজের ব্যবহার: সাঁটলিপি গতি বৃদ্ধির শেষ আশ্রয়স্থল হলো ফ্রেজ। অতএব সাঁটলিপি লিখনে যথাযথ স্থানে ফ্রেজ প্রয়োগের মাধ্যমে গতি বৃদ্ধি করা সম্ভব।
গতিমুখ: সাঁটলিপিতে সাংকেতিক চিহ্নগুলোর নির্দিষ্ট গতিমুখ রয়েছে। অতএব, সাংকেতিক গতিমুখের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
আকৃতি: সাঁটলিপিতে সাংকেতিক চিহ্নগুলোর নির্দিষ্ট আকৃতি রয়েছে। অতএব, অক্ষরের সাংকেতিক চিহ্নগুলোর আকৃতির দিক বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। সাংকেতিক চিহ্নের আকৃতি পার্থক্য অনুযায়ী না লিখলে অনুবাদ করা সম্ভব হবে না । সমতালে অনুশীলন: শ্রুতলিপিতে গতি বৃদ্ধির জন্য পাঠ্য বই সমতালে অনুশীলন করতে হবে, অর্থাৎ বাংলা তিন অধ্যায় অনুশীলন করলে ইংরেজিও তিন অধ্যায় পর্যন্ত অনুশীলন
করতে হবে।
দ্রুত লেখা আরম্ভ: প্রথমে শুনতে হবে এবং দ্রুত লেখা আরম্ভ করতে হবে। একটি শব্দ লেখা শেষ হলে সাথে সাথে আরেকটি শব্দ আরম্ভ করতে হবে।
ধীরস্থির অগ্রসর: সাঁটলিপি লিখনের অভ্যাস করার সময় ধীরস্থিরভাবে অগ্রসর হতে হবে। প্রথমে হয়তো কিছুটা অসুবিধার সম্মুক্ষীন হতে পারে। কিন্তু আত্মবিশ্বাস নিয়ে আস্তে আস্তে শ্রুতলিপি লিখনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: সাঁটলিপির শ্রুতলিপিকরণের জন্য
প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন: মধ্যমানের রুপ করা কাগজ, একাধিক বলপেন, স্কেল ইত্যাদি উপকরণ রাত।
মনোযোগী : সাঁটলিপির গতি বৃদ্ধির জন্য गानয
দরকার ।
ভাষা জ্ঞান: সাঁটলিপির গতি বৃদ্ধির জন্য ভাষাজ্ঞান অর্থাৎ শব্দের উচ্চারণ জ্ঞান অপরিহার্য।
অপরিচিত শব্দ লেখা : সাঁটলিপি লেখার সময় অপরিচিত কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম অথবা অপরিচিত স্থানের নাম আসতে পারে তাৎক্ষনিকভাবে তা লিখে শব্দের নীচে একটা আণ্ডার লাইন দিয়ে রাখতে হবে।
অগ্রিম অনুশীলন: সাঁটলিপি প্রশিক্ষণরত অবস্থায় নির্ধারিত বইয়ের যতটুকু অনুশীলন করা হয়েছে তার বাইরে যাওয়া যাবে না।
অবিকল অনুশীলন: আপনার পাঠ্য বই অনুশীলনের সময় বইয়ের বাংলা বা ইংরেজি শব্দগুলো সাঁটলিপির সঙ্গে মিলিয়ে দেখবেন, পরবর্তীতে শুধুমাত্র সাঁটলিপি দেখে দেখে খাতায় অনুশীলন করবেন।
নিয়ম অনুশীলন: সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময় অথবা কোর্স সমাপ্তির পরে কোন অধ্যায় অনুশীলন করার পূর্বে পাঠ্য বইয়ের নিয়মটি ভাল করে বুঝে নিতে হবে।
সাঁটলিপি কী একটি ভাষা?
বিশ্বের প্রত্যেকটি আলাদা ভূখণ্ডে ভিন্ন ভিন্ন জাতি বসবাস করে থাকে। তাদের সমাজ প্রথা, চালচলন, বাচনভঙ্গি এবং ভাষাও ভিন্ন ভিন্ন। তাই এ পৃথিবীর বিভিন্ন জাতি তাদের নিজেদের মনের ভাব অন্যের কাছে প্রকাশ করার জন্যে নিজস্ব একটি ভাষা ব্যবহার করে থাকে। প্রত্যেকেই তাদের মাতৃভাষাকে প্রকাশের জন্য বিভিন্ন সময় কতগুলি নির্দিষ্ট নিয়ম, সংকেত বা পদ্ধতির আবিষ্কার করেছে। এ পদ্ধতির ফলদায়ক রূপই হল কতগুলি নির্দিষ্ট বর্ণমালার আবিস্কার। যেমন: ইংরেজি ভাষা প্রকাশের বর্ণমালা হল a, b, c, d আবার বাংলাভাষা প্রকাশের বর্ণমালা হল অ, আ, ক, ইত্যাদি কিন্তু যার যার ভূখণ্ডে প্রচলিত ভাষা তার ঐ নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মধ্যেই অনেক সময় সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ কার্য সম্পাদনের জন্য ইংরেজি ভাষায় ব্যবহার করে থাকে। কারণ ইংরেজিই একমাত্র আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ভাষা। কিন্তু শর্টহ্যান্ড
বা সাঁটলিপি স্বতন্ত্র কোন ভাষা নয়। এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কোন পরিভাষাও নয়। এর নিজস্ব কোন ধ্বনি বা উচ্চারণ নেই, যার
মাধ্যমে মানুষ তার নিজের মনের ভাবকে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে। নির্দিষ্ট কোন ভাষাকে বিশেষ কতকগুলি চিহ্নের বা সংকেতের মাধ্যমে দ্রুত লেখার মাধ্যম হিসাবে শর্টহ্যান্ড ব্যবহার করা হয় । ভাষাকে দ্রুতবেগে এবং অল্প সময়ে লেখার জন্য শর্টহ্যান্ডে কতগুলি নির্দিষ্ট ধ্বনিসংকেত (Phonotype) চিহ্ন, স্বরবর্ণ, ও ব্যঞ্জনবর্ণ আবিস্কার হয়েছে। এ ধ্বনিতত্ত্বকে চিহ্নগুলির সাহায্যে যে কোন ভাষায় দ্রুত এবং সংক্ষেপে লেখা
সম্ভব ।